আজ রবিবার, ০১ অক্টোবর ২০২৩, ০৫:৩৫ পূর্বাহ্ন

ডেস্ক নিউজ- বাংলাদেশে একটি হাসপাতালে ১২শ’ টাকা বেতনে কাজ করতেন ময়না বেগম। হাসপাতালে চাকরির কথা বলে সৌদি আরবে ভালো বেতনে কাজের জন্য পাঠানো হয় তাকে। কিন্তু সেখানে গিয়ে তাকে একটি বাড়িতে কাজের জন্য নেয়া হয় এবং শিকার হতে হয় যৌন নির্যাতনের।

“প্রথমে আমাকে এয়ারপোর্ট থেকে গাড়িতে নিতে আসে দুই পুরুষ। দেখে ভয় পাই। পরে ওই বাড়িতে ঢুকে যখন এক মহিলা দেখি তখন মনে সাহস আসে। কিন্তু রাতে গোসল করায়ে আমারে পাতলা ফিনফিনে কাপড় পরতে দেয়, সেটা আমি পরতে না চাইলে মারধোর শুরু করে।

“এরপর আমার ঘরে প্রথমে আসে ছেলে, পরে আসে বাপ। তারপর আমারে জড়ায়ে ধরে নির্যাতন করে। বাধা দিতে গেলে আমারে মাইরা-ধইরা, কামড়াইয়া-চিমড়ায়া কিছু রাখে নাই”।

শনিবার ঢাকায় এক গণ-শুনানিতে নিজের ওপর সৌদি আরবে ঘটে যাওয়া নির্যাতনের ঘটনার কথাগুলো বলছিলেন ময়না বেগম। লাল কাপড় দিয়ে নিজের মুখ ঢেকে মঞ্চে দাঁড়িয়ে কাঁদতে কাঁদতে বলছিলেন তিনি, নয়মাস এমন নির্যাতনের ফলে এই নারীর প্রজনন অঙ্গে যে ক্ষত তৈরি হয়েছে তাতে এখনো চিকিৎসার মধ্য দিয়ে যেতে হচ্ছে।

“আমার স্বামী নাই। আমার স্বামী থাকলে আমারে ঘরে উঠাইতা না। অনেক কষ্টে ছেলেরে নিয়া আছি।”

সৌদি আরব, জর্ডান, লেবানন বা মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে বাংলাদেশ থেকে কাজের জন্য যাওয়া নারীরা কেমন আছেন- এই বিষয়ে আয়োজিত এক গণ-শুনানিতে এভাবেই আরও অনেক ফিরে আসা নারী শ্রমিক যৌন নির্যাতনসহ বিভিন্ন নির্যাতনের বর্ণনা দেন।

বেসরকারি সংগঠন ওয়ান-বিলিয়ন রাইজিং বাংলাদেশ নামে একটি উদ্যোগের আয়োজনে এই গণশুনিানিতে নারী শ্রমিকদের কথা শোনেন বাংলাদেশের কয়েকজন সাবেক বিচারপতি এবং মানবাধিকার কর্মী, অভিবাসন বিশেষজ্ঞ ও শ্রমিক নেতারা ।

এ অনুষ্ঠানে দ্বিপাক্ষিক চুক্তি ছাড়া নারী শ্রমিক পাঠানোর বিষয়ে বিরোধিতা জানিয়েছে শ্রমিক মানবাধিকার কর্মী এবং অভিবাসন বিশেষজ্ঞরা।

সেখানে অভিবাসী নারী শ্রমিকদের ওপর বিদেশে নির্যাতনের বিষয়ে সরকারের আরও জোরালো পদক্ষেপ -এর দাবি উঠে আসে।

প্রত্যেকেই চড়া সুদে কিস্তিতে টাকা ধার নিয়ে বা বাড়ির টুকটাক জিনিস বিক্রি করে দালালকে টাকা দিয়ে বিদেশে গিয়েছিলেন। সে ২০/২৫ হাজার রোজগারের প্রলোভন দেখানো হয়েছিল তাদের।

অভিবাসী বা পাচার হয়ে যাওয়া নারীদের আইনি সহায়তা প্রদানকারী সংগঠন বাংলাদেশ জাতীয় মহিলা আইনজীবী সমিতির প্রধান সালমা আলী বলেন, মধ্যপ্রাচ্যে অভিবাসী নারী শ্রমিকদের মধ্যে ৯৯ শতাংশই শারীরিক মানসিক সব ধরনের নির্যাতনের শিকার ।

গন-শুনানিতে প্রদান করা তথ্য অনুসারে ১৯৯১ সাল থেকে চলতি বছরের অক্টোবর পর্যন্ত ৬ লাখ ৭৪ হাজার নারী শ্রমিক বিভিন্ন দেশে গিয়েছে। তার মধ্যে সাড়ে ৩ লাখ গিয়েছে গত তিনবছরে। । মূলত ফিলিপাইন, ইন্দোনেশিয়া, শ্রীলঙ্কা নারী শ্রমিক পাঠানো বন্ধ করে দেয়ার পর বাংলাদেশের নারী শ্রমিকদের প্রতি নজর পড়ে মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর। সরকারি ব্যবস্থাপনায় তারা যাচ্ছেনা, যাচ্ছে বায়রার বিভিন্ন এজন্সেরি মাধ্যমে। কারণ দেশগুলোর সাথে বাংলাদেশের দ্বিপাক্ষিক কোনও চুক্তি নেই, যা আছে তা কেবল এমওইউ বা সমঝোতা স্মারক। প্রবাসী শ্যমকিদের নিয়ে কর্মরত বেসরকারি সংগঠন ওয়ারবির পরিচালক এবং সাবেক প্রবাসী শ্রমিক সাইফুল হক সে বিষয়টি তুলে ধরে ।

অনেক শ্রমিক সেখানে নির্যাতনের মুখে মৃত্যুবরণ করতে বাধ্য হচ্ছে বলে তিনি জানা সালমা আলী। যতক্ষণ পর্যন্ত মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলেরর সাথে দ্বিপাক্ষিক চুক্তি না হয় সে পর্যন্ত এ ধরনের দেশে নারী শ্রমিক পাঠানো বন্ধ রাখতে হবে- এই দাবি তুলে ধরেন মানবাধিকার আইনজীবী সালমা আলী।

গণ-শুনানিতে অংশ নেয়া নারী শ্রমিকদের কেউ কেউ এমনকি রাজধানী ঢাকাতে আসার আগেই দালালদের মাধ্যমে পৌঁছে গিয়েছিলেন মধ্য-পাচ্যের নানান দেশে। ফলে গ্রামীণ নারীদের মধ্যে এধরনের নির্যাতনের ভয়াবহতার চিত্র তুলে ধরার প্রয়োজনীয়তার কথাও উঠে আসে গণ-শুনানিতে।

সুত্র- বিবিসি

 
 
 

আরও পড়ুন

২০২০ সালে যে ১০টি দক্ষতা তরুণদের থাকা চাই

২০২০ সালে যে ১০টি দক্ষতা তরুণদের থাকা চাই

উত্তরায় শিশু হত্যার প্রতিবাদে সড়ক অবরোধ

বিসিএস (পুলিশ) ক্যাডারের ১৯ জন কর্মকর্তাকে পুলিশের অতিরিক্ত উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি) পদে পদোন্নতি।

পঞ্চগড়ে পুলিশের অভিযানে ইয়াবা সহ ব্যবসায়ী আটক

পঞ্চগড়ে ব্রিক ফিল্ডে ঢুকে সন্ত্রাসী কর্মকান্ড, থানায় অভিযোগ –

চলছে পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলায় মাদকের বিরুদ্ধে সাড়াশি অভিযান।

পঞ্চগড়ের মাদক রুট বন্ধে সফল অভিযান চলছে বোদা উপজেলায়

মাদকের বিরুদ্ধে সাড়াঁশি অভিযান অব্যাহত পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলায়

বাংলাদেশী সিনেমার সালতামামি আশির দশক

উওরখানে সরকার নিষিদ্ধ ঘোষিত পলিথিন ফ্যাক্টরিতে সয়লাব

গাজা উদ্ধার, গাজার ব্যাপারী ( পাইকার) গ্রেফতার

বিমানবন্দর ৩ কেজি গাজা সহ মাদক ব্যবসায়ী আটক

 

Top
ব্রেকিং নিউজ :
WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com