আজ শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ১২:০৯ অপরাহ্
প্রতিনিধি –
অনুসন্ধানী পর্ব – ১
রাজধানী উত্তরা নবাব হাবিবুল্লাহ স্কুল এন্ড কলেজ এবং ১৩ নং সেক্টরের জমজম টাওয়ারের পাশে রাজউকের খালি প্লটে করোনাকালীন স্বাস্থ্যবিধির তোয়াক্কা না করে চলছে মেলা। আর মেলায় শিশুদের দৃষ্টি আকর্ষণ এর জন্যে বসানো হয়েছে নানান রাইডস। আর সেই রাইডসগুলো বসানো হয়েছে কাঁচা মাটির উপর । শিশুদের জীবনের ঝুকি পরিলক্ষিত হচ্ছে তাতে। যে কোন মূহুর্তে ঘটতে পারে দূর্ঘটনা।
এইদিকে জনবহুল এলাকায় করোনা মহামারীর সময় কোন প্রকার অনুমতি না নিয়ে এমন মেলা বসানোয় আশপাশের আবাসিক বাসিন্ধারা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন আমাদের প্রতিনিধির কাছে। আহাম্মেস ইলিয়াস নামের এই ছাকিলের অবৈধ মেলার পাশে বসবাসকারী একজন বাড়ীর মালিক জানান, “সরকার লকডাউন ঘোষণা করলেও প্রশাসনের কিছু কর্মকর্তা হয়ত সহযোগিতা করছে না। নইলে কিভাবে সম্ভব মাসের পর মাস লকডাউন উপেক্ষা করে উন্মুক্ত স্থানে এমন মেলা বসানো। ”
এইদিকে অবৈধ মেলা প্রসংগে ছাকিলকে জিজ্ঞেস করলে সে নিজেকে সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে পকেট থেকে একটি অপরিচিত অনলাইন পোর্টালের আইডি কার্ড বের করে দেখায়। যদিও শুদ্ধ করে সেই পোর্টালের নামটি উচ্চারণ করতে পারেনি সে। সাথে জাতীয় প্রেসক্লাবের কার্যকরী একজন সদস্যের নামও সে বলে। যদিও তিনি ছাকিলের অবৈধ কর্মকান্ড সম্পর্কে জানেন কিনা সেই নিয়ে রয়েছে প্রশ্ন। আমাদের প্রতিনিধি একটু আগবারিয়ে জানতে চান, তিনি তার নাম ব্যবহার করে অবৈধ মেলা করার অনুমতি দিয়েছেন কি না। তিনি কোন সহযোগিতা করছেন কিনা সেই বিষয়ে আর উত্তর দিতে পারেনি ছাকিল। তাকে প্রশ্ন করা হয় নিয়মিত বা কখনও আপনার পোর্টালে রিপোর্ট করেন কি না। তার উত্তর ছিল পাশকাটিয়ে যাওয়া। এখানেই তার ধূর্তামোর শেষ নয়। তার ভাই একজন প্রতিষ্ঠিত সাংবাদিক বলায়, এই অবৈধ মেলার সাথে তার সম্পর্ক আছে কিনা জানতে চাইলেও কোন সদুত্তর দিতে পারেনি ছাকিল। সে বারবার নিজেকে উদ্দেশ্যমূলক ভাবে সাংবাদিক পরিবারের সদস্য পরিচয় দিয়ে যাচ্ছিল ক্রমাগত । ছাকিলের কাছে জানতে চাওয়া হয় মেলাগুলো অনুমতি নিয়েছে কি না। সে জানায় অনুমতি নিয়েছে হাবিবুল্লাহ স্কুল এন্ড কলেজের প্রিন্সিপাল এর কাছ থেকে। অন্যটির অনুমতির ব্যপারেও সে স্পষ্ট কিছু বলতে পারেনি। এইদিকে প্রিন্সিপাল শাহিনূর রহমান এর নিকট মেলার অনুমোদন দিয়েছেন কি না জানতে চাইলে ; তিনি প্রতিনিধিকে তার সাথে দেখা করতে বলেন। এমন রহস্যজনক পরিস্থিতিতে আমাদের প্রতিনিধি যোগাযোগ করেন পুলিশের উপ-কমিশনার মোঃ শহিদুল্লাহ বিপিএম ও পিপিএম এর সাথে। তিনি জানান, গত দেড় মাসের মধ্যে উত্তরা পুলিশ বিভাগের পক্ষ থেকে কোন মেলার অনুমোদন দেওয়া হয়নি। যদি কেউ এমন মেলা আয়োজনের চেষ্টা করে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
অন্যদিকে ঢাকা-১৮ আসনের সাংসদ আলহাজ্ব হাবিব হাসান এর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন,এমন কোন মেলার অনুমোদন কেউ দিয়েছে তা আমার জানা নেই। তবে হাবিবুল্লাহ স্কুল এন্ড কলেজের মেলার ব্যাপারে তাদের নিষেধ করা হয়েছে। মহামারী করোনা কালীন সময়ে এমন মেলার আয়োজন করার চেষ্টা কেউ করবে না বলেই বিশ্বাস।
কিন্তু আমাদের প্রতিনিধি সরেজমিন পরিদর্শন করে দেখতে পান মেলা চলছে। ক্রেতা বিক্রেতারা কেনাকাটা করছে। হাবিবুল্লাহ স্কুলের মেলায় স্কুলের প্রহরীরা পাহারা দিচ্ছে। একজন পাহারাদারকে জিজ্ঞেস করলে, সে নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানায়, স্কুল কর্তৃপক্ষ তাদের মেলা পাহারায় নিয়োজিত করেছে।
এইদিকে ঢাকা -১৮ আসনের সাংসদ হাবিব হাসান আরও বলেন, ঢাকা – ১৮ আসনে কোন অনিয়মের সংবাদ পেলেই আমাকে জানাবেন। সকল অনিয়মের বিরুদ্ধেই ব্যবস্থা নেওয়া হবে ইনশাআল্লাহ।
পরিস্থিতি বলছে প্রশাসনের নাকের ডগায় বসে মেলার বিষয়ে লুকোচুরি খেলছে মূলত শাকিল গং।
অন্যদিকে সরকার যখন করোনা নিয়ন্ত্রণে হিমসিম খাচ্ছে তখন এই ছাকিলদের সহায়তায় কান্ডজ্ঞানহীন কিছু সরকার বিরোধী চক্র প্রকৃতই সরকারকে বিপদে ফেলতে চাচ্ছে ক্রমাগত । আর সেই কথা ভাবার যথেষ্ট অবকাশ রয়েছে। নবাব হাবিবুল্লাহ স্কুল এন্ড কলেজের প্রিন্সিপাল শাহিনূর রহমান জামায়াতে ইসলামীর আমীর পর্যায়ের নেতা বলেই জানে অনেকে । লোক বলে তার স্বাধীনতা বিরোধী মানষিকতার সাথে ছাকিল আটকে পরা পাকিস্তানি নাগরিকের একটি গাটের মিল রয়েছে । ফলশ্রুতিতে তাদের এই অবৈধ মেলার আয়োজন করে সরকারের নির্দেশনা না মেনে করোনা নিয়ন্ত্রণে যথেষ্ট অসহযোগীতার লক্ষণ দেখা যাচ্ছে। এখনই এই অশুভ চক্রের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিলে ছড়িয়ে পরতে পারে মহামারী চারিদিকে। যা মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের সরকারকে ফেলতে পারে বেকায়দায়।