আজ বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১:৪৩ পূর্বাহ্ন
নিজেস্ব প্রতিনিধি –
পঞ্চগড় জেলার বোদা উপজেলার থানা–পুলিশের তদন্তে সেই নবজাতকের মায়ের খোঁজ পাওয়া গেছে। আর সেই নবাজতককে জন্ম দেওয়া কিশোরী (১৫) ধর্ষণের শিকার হয়েছিলেন বলে অভিযোগ উঠেছ । গতকাল রোববার সন্ধ্যায় ওই কিশোরীর বাবা বাদী হয়ে বোদা থানায় শ্রী ধনেশ (২২) নামের এক তরুণসহ তাঁর বাবা–মায়ের বিরুদ্ধে ধর্ষণ ও হুমকি প্রদানের মামলা করেছেন। অভিযুক্ত ধনেশ আটোয়ারী উপজেলার রাধানগর ইউনিয়নের গোপালজোত এলাকার বাসিন্দা। এদিকে আজ সোমবার বেলা সাড়ে তিনটায় ওই নবজাতককে নিয়ে জেলা শিশুকল্যাণ বোর্ডের সভা হওয়ার কথা আছে।
বিষয়টি ওই কিশোরী নিজের পরিবারের কাছে গোপন রেখেই ধনেশের বাবা-মাকে জানায় বলে মামলার এজাহারে দাবি করা হয়। এতে ধনেশের পরিবারও বিষয়টি কাউকে না জানানোর জন্য ওই কিশোরীকে হুমকি দেয়।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, অভিযুক্ত তরুণ ধনেশ আত্মীয়তার সম্পর্কের সুযোগে ওই কিশোরীর বাড়িতে প্রায়ই যাতায়াত করত। কিশোরী স্থানীয় একটি বালিকা বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণিতে পড়ুয়া ছাত্রী। প্রায় দেড় বছর আগে প্রেমের প্রস্তাব দিয়েছিল ধূর্ত এই ধনেশ। এর পর থেকে ওই কিশোরীকে নানাভাবে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে প্রায় ১০ মাস আগে ধনেশ ধর্ষণ করে সে । তারপর থেকে ওই কিশোরীকে বাবা-মায়ের অজান্তে নিয়মিত ধর্ষণ করে গেছে ধানেশ নামের সেই লম্পট। আর এভাবে ধর্ষণে ওই কিশোরী অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়লে বিষয়টি কিশোরী ধনেশকে জানায়। কিন্তু ধনেশ ক্ষিপ্ত হয়ে বিষয়টি কাউকে জানালে কিশোরীকে মেরে ফেলার হুমকি দেয়।
পরে বিষয়টি ওই কিশোরী নিজের পরিবারের কাছে গোপন রেখেই ধনেশের বাবা-মাকে জানায় বলে মামলার এজাহারে দাবি করা হয়। এতে ধনেশের পরিবারও বিষয়টি কাউকে না জানানোর জন্য ওই কিশোরীকে হুমকি দেয়। সর্বশেষ ১৭ সেপ্টেম্বর রাতে ওই কিশোরীর বাড়িতে এসে ধনেশ অন্তঃসত্ত্বা তাকে আবারও ধর্ষণ করেন। এরপর ২২ সেপ্টেম্বর দিবাগত রাত তিনটায় প্রসববেদনা উঠলে ওই কিশোরী বাড়ির পাশে একটি ধানখেতে গিয়ে সন্তান প্রসব করে। এ সময় লোকলজ্জার ভয়ে নবজাতক শিশুকে সেখানে ফেলে রেখে বাড়িতে চলে আসে ওই কিশোরী।
পরে শিশুটির কান্নার শব্দ শুনে স্থানীয় লোকজন নবজাতকটিকে উদ্ধার করে বোদা থানা–পুলিশ ও বোদা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে (ইউএনও) খবর দেন। খবর পেয়ে তাঁরা ওই নবজাতককে পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালে ভর্তি করেন।
ঘটনার পর থেকেই বোদা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু সাঈদ চৌধুরীর নেতৃত্বে পুলিশের একটি দল তদন্তে নামে। এরপর গত শনিবার গভীর রাতে পুলিশ ওই নবজাতকের পরিচয় নিশ্চিত হয়। বোদা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবু সাঈদ চৌধুরী বলেন, নবজাতকের জন্মের সঠিক রহস্য উদঘাটন করতে পেরে আমাদের দ্বায়িত্ব পালন করেছি। মামলা হয়েছে। এখন আদালতের নির্দেশনার উপর সকল সিন্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানান। পরে পুলিশ ওই কিশোরীর পরিবারের সঙ্গে কথা বললে তাঁরা পুলিশকে ঘটনা খুলে বলেন।
এদিকে জেলা প্রশাসনের তত্ত্বাবধায়নে হাসপাতালে থাকা ওই নবজাতককে অনেকেই দত্তক নিতে চেয়ে যোগাযোগ করছেন বলে জানা গেছে। তবে ওই নবজাতকের স্বজন খুঁজে পাওয়ায় এখন তাকে হস্তান্তরের বিষয়ে আদালতের নির্দেশনা অনুসরণ করা হবে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
এইভাবে অনাকাংখিত শিশু জন্ম নিয়ে পুরো জেলায় চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে বলে জানা গেছে।