আজ শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১০:৪৬ পূর্বাহ্ন
প্রতিনিধি: লক্ষ্মীপুরের দিঘলী ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি ও ৬ নং ওয়ার্ড মেম্বার মো. মঞ্জুুসহ কয়েকজনের আক্রশের আগুনে পুড়ছে সাত্তার এগ্রো খামার।
জানা যায়, মঞ্জু ওই খামার মালিকের নিকট চাদা দাবী করলে খামার মালিক শাজাহান তা দিতে অস্বীকার করেন। এরপর ওই খামারের মালিকের খামারের পাশে স্তুপ করে রাখা খরের গাদায় আগুন লাগানো হয়। আর সেই আগুনে প্রায় ৩ লক্ষ টাকার খর পুড়ে যায় বলে জানায় স্থানীয়রা।
ললক্ষ্মীপুরের দুর্গাপুরের দীঘলী গ্রামের যুবলীগের এই নেতা দম্ভ করে বলেন, এইটা আমার এলাকা। এখানকার রাস্তাঘাট সব আমার। গ্রামে খামার ও রাস্তাঘাট ব্যবহার করতে হলে টাকা (চাঁদা) দিতে হবে। না হয় কোন খামার হবে না এই দুর্গাপুরে। আমি এখানকার জনপ্রতিনিধি ও যুবলীগ নেতা।’
সাত্তার এগ্রো খামারের মালিক মো. শাহজাহান বলেন, দিঘলীর দুর্গাপুর গ্রামে ৩ একর জমির উপর একটি খামার করেছি। সেই খামারের জন্য গাড়িতে করে খড় কিনে এনেছি। তাতে এলাকার কারো কোন সমস্যা হয়নি। তবুও স্থানীয় ইউপি সদস্য ও যুবলীগ নেতা মঞ্জু ও তার প্রধান পরামর্শদাতা সেলিম মাহমুদ গত ৫ জানুয়ারি (মঙ্গলবার) আমার খামারে আসে। তখন সে দুই লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে। টাকা দিতে অপরাগতা প্রকাশ করলে, তাৎক্ষনিক তিনি খড়ের গাঁদায় আগুন লাগানোর চেষ্টা করেন। কিন্তু স্থানীয়রা থাকায় সেটি আর সম্ভব হয়নি।
পরে ২৪ ঘন্টার মধ্যে দাবিকৃত টাকা দেওয়ার হুমকি দিয়ে তিনি ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন। যুবলীগ নেতার বেঁধে দেওয়া সময়ের মধ্যে দাবিকৃত টাকা না দেওয়ায়, পরের দিন রাতে খড়ের গাঁদায় আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়। এতে ৩ লাখ টাকার খড় আগুনে পুড়ে যায়। তাছাড়া খামারও ক্ষতিগ্রস্থ হয়। এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার অজ্ঞাত ৪-৫ জনকে আসামি করে চন্দ্রগঞ্জ থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন সাত্তার এগ্রো ফার্মের মালিক মো. শাহজাহান। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত ঘটনায় সম্পৃক্ত কোন আসামিকে পুলিশ আটক করতে পারেনি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ইউপি সদস্য মঞ্জু বলেন, তার বিরুদ্ধে আনীত চাঁদার অভিযোগ সঠিক নয়. তবে রাস্তায় টলি চালানো যাবেনা এই কথা বলে বাউন্ডারির ভিতরে গিয়ে গ্যাস লাইট দিয়ে আগুন ধরিয়ে দেওয়ার হুমকীর বিষয়টি স্বীকার করে, মঞ্জু বলেন এটি ছিল নিছক দুষ্টামি মানে শয়তানি। মঞ্জু বলেন, আমি কোন অপকর্মের সাথে জড়িত নই। অপর প্রশ্নে সেলিম মাহমুদ মঞ্জুর প্রধান পরামর্শক, এ বিষয়ে তিনি বলেন, আমার কোন পরামর্শক নেই। অন্যদিকে, পরে দিন রাত ১০টায় যখন খড়ের গাঁদায় আগুন লাগে তখন তিনি একটি সালিসে ছিলেন বলে এ প্রতিবেদককে জানিয়েছেন।
তবে স্থানীয়রা জানান, এলাকায় কোন উন্নয়নমূলক কাজ করতে গেলেই মেম্বার মঞ্জুকে চাহিদামত চাঁদা পরিশোধ করতে হয়। নয়তো সেলিম মাহমুদের পরামর্শে ঐ উন্নয়ন কাজের বারোটা বাজিয়ে ছাড়েন মঞ্জু মেম্বার। স্থানীয়রা আরো জানান, মঞ্জু মেম্বার ও তার পরিবারের অন্যান্য সদসস্যের বিরুদ্ধে থানায় একাধিক মামলা থাকলেও অদৃশ্য ঈশারায় বারবারই ধরাছোঁয়ার বাইরে থেকে যান মঞ্জু মেম্বার। আর নির্দিধায় একের পর এক চালিয়ে যাচ্ছেন নানা অপকর্ম।
তবে চন্দ্রগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জসিম উদ্দিন ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে জানান, এই বিষয়ে একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি, তদন্ত করে থানায় মামলা নেওয়া হয়েছে। তিনি আরো জানান, আসামিরা যত শক্তিশালিই হোক না কেন দ্রুতই তাদের আইনের আওতায় আনা হবে।